স্বরুপকাঠি প্রতিবেদক ॥ স্বরুপকাঠির অলিগলী সর্বত্রই রয়েছে চায়ের দোকান।৫০ হাজারাধিক পরিবারের মধ্যে এমন কোনো পরিবার খুজে পাওয়া যাবেনা যেখানে চা পান করা হয়না। একটি পরিবারে প্রতিদিন ১৫ গ্রাম চা দরকার হলে ৫০ হাজার পরিবারে প্রতিদিন ৭৫০কেজি ও প্রায় ২ হাজার চায়ের দোকানে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার কেজি চা ব্যবহার করা হয়। সে হিসেবে পরিবার ও দোকান মিলিয়ে প্রতিদিন পৌঁনে তিন হাজার কেজি চা বিক্রি হয় এ উপজেলায়।এ বিশাল বাজারের সুবিধা নিতেই এখানে গড়ে উঠেছে বিশাল চা দুর্নীতি চক্র।
মৌলভী বাজার, শ্রিমঙ্গল এবং ঢাকা থেকে খুবই নি¤œ মানের চায়ের গুড়া কিনে সুগন্ধী ও পানে ব্যবহার করা খয়ের মিশিয়ে বিভিন্য কম্পানীর প্যাকেটে ভরে বাজারে সরবারহ করছে একটি চক্র। আর এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন নামী দামী কম্পানীর স্বরুপকাঠিতে নিয়োজিত এস আর ও ডিএসআর রা বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরজমিনে মিয়ারহাট বাজার সংলগ্ন মোল্লা বাড়ি ও মাঝি বাড়ির মাঝখানে জিন্দেগির মিয়ার বিল্ডিং এর নিচ তলায় দেখা যায় বিভিন্ন কম্পানীর অনেকগুলা কার্টুন ভর্তি কয়েক হাজার ৫০, ১০০, ২০০ গ্রাম এবং এক কেজি চায়ের খালি প্যাকেট।পার্শবর্তী আরেক রুমে দেখা যায় গুরা চা ভর্তি বেশ কিছু ১০০ ও ৫০ কেজির বস্তা। এখানেই মির্জাপুর, কোয়ালিটি ও রয়েল চায়ের ১ কেজির কয়েকশত ভর্তি প্যাকেট দেখা যায়। প্যাকেট করার কাজে নিয়োজিত উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের চঞ্চল সমদ্দার বলেন আমি এখানকার কর্মচারী।বরগুনার মনোজ মিস্ত্রির অধিনে আমি কাজ করি। চঞ্চল আরো জানান মিয়াজিপুর নামে একটা প্যাকেটে আমরা চা বিক্রি করি । কিন্ত গত কয়েকমাস ধরে মির্জাপুর, রয়েল ও কোয়ালিটি চা প্যাকেট করা হয়। চা প্যাকেট করার জন্য বিএসটি আই সহ কোনো অফিসিয়াল প্রমানও দেখাতে পারেননি চঞ্চল।এসময় মালিক মনোজের মোবাইল নম্বর চাইলে তাও দিতে পারেননি তিনি।
বিষয়টি নিয়ে মির্জাপুর চায়ের সত্যাধিকারী ইসম্পাহানী গ্রুপের স্বরুপকাঠি ডিপোর ডেলিভারী ম্যান পটুয়াখালির আমির হোসেন এ বিসয়ে রিপোর্ট না করে একত্রে চা খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এবং একই ডিপোর এস আর বাবুগঞ্জ উপজেলার মনির বলেন ঢাকা অফিস থেকে প্রায় সময়ই খোলা চা বিক্রি করা হয় এবং সাথে কম্পানীর প্যাকেটও দিয়ে দেয় চা ক্রেতাকে। ক্রেতা ওই প্যাকেটে চা ভরে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। তবে ওনার সামনেই কম্পানীর জি এম ওমর হারুনের বাংলা লিংক নম্বরে কথা বললে তিনি জানান কম্পানীর থেকে কোনো লুচ চা বিক্রি করা হয়না এবং প্যাকেট দেয়ার প্রশ্নই আসেনা।
চায়ের গুড়ার মধ্যে পানের খয়ের ও সুগন্ধী ব্যবহারের বিষয়ে স্বরুপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্র জানান এই চা মানব দেহের মারত্মক সমস্যা তৈরী করতে পারে। এ কারনে গ্যাস সমস্যা, লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি এ চা পানে মানুষকে বিরত থাকতে বলেন। কিভাবে চিনবেন নকল চা এ ব্যাপারে মুদি ব্যবসায়ী মাসুম বলেন মানুষ একটু সচেতন হলেই এই নকল চা চিনতে পারবে। তিনি বলেন গরম পানি ছারা সাধারনত চায়ের লিকার বের হয়না। তবে এই চা ঠান্ডা পানিতে মিশালেও দ্রুতই খয়ের এর রংয়ে পানির রং পরিবর্তন হয়ে যাবে।
Leave a Reply